অগ্রিম কর বাড়ায় গণপরিবহনে জটিলতা বাড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিগত ২০২৩-২৪ এবং চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের চেয়ে এ করহার প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে। যাত্রীর নিরাপত্তায় বরাদ্দ না বাড়িয়ে কেবল করহার বাড়ানোতে গণপরিবহনে যাত্রীর ওপর পড়তে পারে খরচের চাপ। যদিও যাত্রীর ওপর চাপ পড়বে না এনবিআরের দাবি। নতুন অর্থবছরে বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত ৫২টির বেশি আসনবিশিষ্ট বাস সারাবছর যত আয়ই করুক না কেন, বছরে একবার ২৫ হাজার টাকা অগ্রিম কর দিতে হবে। চলতি অর্থবছর এ ধরনের যানবাহনের ক্ষেত্রে ১৬ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। আর ৫২টির অধিক আসন নয় এমন বাসের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা দিতে হবে। যদিও ওসব যানবাহনে চলতি অর্থবছরে সাড়ে ১১ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। এনবিআর এবং গণপরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নতুন অর্থবছরে অর্থ অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুযায়ী শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসের জন্য দিতে হবে ৫০ হাজার, ডাবল ডেকার বাস ২৫ হাজার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মিনিবাস বা কোস্টার ২৫ হাজার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এমন মিনিবাস বা কোস্টার ১২ হাজার ৫০০, প্রাইম মুভার ৩৫ হাজার, পাঁচ টনের অধিক পেলোড ক্যাপাসিটি বিশিষ্ট ট্রাক, লরি বা ট্যাংক লরি ৩০ হাজার; দেড় টনের অধিক তবে পাঁচ টনের অধিক নয় এমন পেলোড ক্যাপাসিটি বিশিষ্ট ট্রাক, লরি বা ট্যাংক-লরি ১৫ হাজার, দেড় টনের অধিক নয় এমন পেলোড ক্যাপাসিটি বিশিষ্ট ট্রাক, লরি বা ট্যাংক লরি ৭ হাজার ৫০০, পিকআপ ভ্যান, হিউম্যান হলার, ম্যাক্সি বা অটোরিকশা ৭ হাজার ৫০০, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্যাক্সিক্যাব ১৫ হাজার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয় এমন ট্যাক্সিক্যাব ৭ হাজার ৫০০ টাকা। তবে পরিবহন খাতে অগ্রিম আয়কর বাড়ানো হলেও আমদানির ক্ষেত্রে বাজেটে ১০-১৫ আসনের মাইক্রোবাসে সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি (এসডি) বা সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ এবং ১৬-৪০ আসনের যাত্রীবাহী বাসের ক্ষেত্রে কাস্টমস ডিউটি (সিডি) বা আমদানি শুল্ক ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও অর্থ অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, মোটরযানটি সরকার, সরকার বা স্থানীয় সরকারের অধীন কোনো প্রকল্প, কর্মসূচি বা কার্যক্রম; কোনো বৈদেশিক কূটনীতিক, বাংলাদেশে কোনো কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘ ও তার অঙ্গসংগঠনের দপ্তরগুলো; বাংলাদেশের কোনো বিদেশী উন্নয়ন অংশীজন এবং তার সংযুক্ত দপ্তর বা দপ্তরগুলো; ধারা ১৬৬-এর উপধারা (২) অনুসারে রিটার্ন দাখিল থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত করদাতারা, অগ্রিম কর পরিশোধ করতে হবে না মর্মে বোর্ড থেকে সার্টিফিকেট গ্রহণকারী কোনো প্রতিষ্ঠান হয়, তাহলে তাদের ক্ষেত্রে অগ্রিম কর সংগ্রহ করা যাবে না।
সূত্র জানায়, ডলারের দাম এক বছরের ব্যবধানে ৮৪ টাকা থেকে বর্তমানে ১২১ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবহন খাতে ব্যবহৃত আমদানীকৃত যন্ত্রাংশ যেমন টায়ার, টিউব, লুব্রিকেন্ট, ইঞ্জিনের যন্ত্রপাতি, ব্রেকসুসহ সকল যন্ত্রাংশের দাম প্রায় দেড়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু গাড়ি ভাড়া বহাল আছে আগের মতোই। এর মধ্যে নতুন করে কর বৃদ্ধি কোনোভাবেই মালিকদের পক্ষে প্রদান করা সম্ভব হবে না। বরং পরিবহন সেক্টরে যে কোন সময় অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। কারণ গণপরিবহণের ভাড়া বিআরটিএ নির্ধারণ করে তেলের দামের ওপর। অথচ ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে অন্য সবকিছু হিসাব করা প্রয়োজন। কারণ পরিবহন খাতে বর্তমানে বিনিয়োগের তুলনায় আয় লাভজনক নয়। এর মধ্যে কর বাড়লেও বাস মালিকরা চাইলেই ভাড়া বাড়াতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে এনবিআর সদস্য (আয়কর নীতি) একেএম বদিউল আলম জানান, এ কর বছরে একবার দিতে হয়। মোটরযান নিবন্ধন বা ফিটনেস নবায়নের সময় প্রতিটি যানবাহনের ক্ষেত্রে এ কর আদায়ের চালান যাচাই করা হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

অগ্রিম কর বাড়ায় গণপরিবহনে জটিলতা বাড়ার শঙ্কা
- আপলোড সময় : ০৬-০৭-২০২৫ ০৩:১৫:২২ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৬-০৭-২০২৫ ০৩:১৫:২২ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ